বাইডেনের নতুন অস্ত্র সরবরাহ অনুমোদন ইউক্রেনে
- By Jamini Roy --
- 20 November, 2024
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে অ্যান্টি-পার্সোনেল ল্যান্ড মাইন সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছেন। এই পদক্ষেপটি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতি রোধ করতে সহায়ক হতে পারে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে। এই খবরটি প্রথমে প্রকাশ পায় ওয়াশিংটন পোস্টে এবং পরে রয়টার্সের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা, ইউক্রেন শুধুমাত্র তাদের নিজস্ব ভূখণ্ডে এসব মাইন ব্যবহার করবে এবং জনবহুল এলাকায় এগুলো ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে, বাইডেন প্রশাসন আগে এমন পদক্ষেপ নিতে চাইছিল না, কারণ এটি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রতি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তবে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পদাতিক সেনাদের অগ্রগতি রোধ করতে অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, কারণ আগে ইউক্রেনকে শুধুমাত্র অ্যান্টি-ট্যাংক মাইন সরবরাহ করা হয়েছিল। তবে, রাশিয়ার আক্রমণের ফলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী নতুনভাবে এসব মাইন ব্যবহার করতে প্রস্তুত। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেসব মাইন ইউক্রেনকে দেওয়া হবে, সেগুলোর বিস্ফোরণের জন্য একটি ব্যাটারির প্রয়োজন। একটি নির্ধারিত সময়ের পর, মাইনগুলো আর বিস্ফোরিত হবে না, এমন একটি সিস্টেমের মাধ্যমে এটি পরিচালিত হবে।
এই পদক্ষেপের পরপরই ইউক্রেন প্রথমবারের মতো মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র (ATACMS) ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালায়। গত ২০ নভেম্বর, রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক এলাকায় হামলার পরপরই এই নতুন অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা আসে। যদিও রাশিয়া এই হামলার পর পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহারের হুমকি দেয়, তবে এতে তাৎক্ষণিক কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে এসব অস্ত্র সরবরাহ করতে চায়নি, কারণ তারা মনে করেছিল যে, এটি যুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলবে। তবে, ৫ নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের সম্ভাব্য বিজয়ের কারণে, বাইডেন প্রশাসন এই নীতি থেকে সরে এসেছে এবং ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পর, রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের এই পদক্ষেপের ফলে যুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারে এবং পারমাণবিক সংঘাতের আশঙ্কা বাড়তে পারে।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, তারা কখনও রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন সরবরাহের অনুমতি এবং ATACMS ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, এই সিদ্ধান্ত সামরিক উত্তেজনা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, ইউক্রেনের সরকার তাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপকে প্রয়োজনীয় বলে মনে করছে।